বিডিনিউজ ১০ ডেস্ক: আজ বুধবার শুরু হচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদের যাত্রা। বিকেল ৩টায় বসছে সংসদ অধিবেশন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গত ৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এই অধিবেশন আহ্বান করেন।
অতীতের ধারাবাহিকতায় এই সংসদ আরো বেশি কার্যকর হবে বলে আশা করছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া আওয়ামী লীগ সংসদে সরকারি দল এবং ২২টি আসন পাওয়া জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে চায়। আসনসংখ্যা কম হলেও জাতীয় পার্টির সদস্যরা সংসদে কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবেন বলে জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা।
সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, আজ বিকেল ৩টায় ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসবে। অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর শোক প্রস্তাব উত্থাপন
ও আলোচনা হবে। অধিবেশনের প্রথম দিন সংসদে ভাষণ দিবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। অধিবেশনকে সামনে রেখে সংসদ ভবন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জানান, ৩০ জানুয়ারি একাদশ সংসদের মেয়াদ শুরু। ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি এই সংসদের মেয়াদ শেষ হবে। এই সংসদের সরকার ও বিরোধী দলের সব সদস্যকে অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রথম দিন ডেপুটি স্পিকারের সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হবে। স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের পর অধিবেশন মুলতবি করা হবে। এরপর নতুন স্পিকার শপথ নিয়ে মুলতবি অধিবেশন শুরু করবেন। অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দিবেন। ওই ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে আগামীতে সংসদে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
দশম সংসদে বিরোধী দলের পাশাপাশি সরকারে থাকলেও এবার শুধু বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করবেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা। ইতিমধ্যে বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ হিসেবে নিয়োগ পাওয়া জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে আমরা প্রস্তুত।’
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের নেতা শেখ হাসিনা এই সংসদে চতুর্থবারের মতো সংসদ নেতার দায়িত্ব পালন করবেন। আর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করবেন। গত ৩ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। এই সংসদে আওয়ামী লীগ ২৫৭টি, জাতীয় পার্টি ২২টি, ওয়ার্কার্স পার্টি তিনটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) দুটি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ দুটি, তরীকত ফেডারেশনের একটি, জাতীয় পার্টি (মঞ্জু) একটি এবং স্বতন্ত্র সদস্যরা তিনটি আসন পেয়েছেন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আটজন সদস্য এখনো শপথ নেননি। আর সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া আসনে আগামী মাসে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব ওয়ারেছ হোসেন জানান, নতুন সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে বরণে প্রস্তুতি নিয়েছে সংসদ সচিবালয়। ওই দিন ভাষণ দেওয়া ছাড়াও নতুন স্পিকারকে শপথ পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি।
সূত্র জানায়, নতুন সংসদের প্রথম দিন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ওপর আনীত শোক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ছাড়াও স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে অধিবেশন পরিচালনার জন্য সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচন করা হবে। এরপর সংসদের সর্বশেষ অধিবেশনের পর রাষ্ট্রপতির জারি করা অধ্যাদেশগুলো সংসদে উত্থাপন করা হবে।
সূত্র আরো জানায়, নতুন সংসদের প্রথম দিনের অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা, দেশ-বিদেশি কূটনীতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা এবং ভিআইপিদের আত্মীয়-স্বজনসহ পাঁচ শতাধিক অতিথি উপস্থিত থাকবেন।